22 Oct 2017

সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে নজরুল

সীতাকুন্ডে 'ট্রেকার' নজরুলের ঝর্ণাবিলাস



শুধু অপু নজরুল যে সীতাকুন্ডে যায় তা নয়, আজ থেকে ৮৮ বছর আগে কাজী নজরুলও গিয়েছিলেন। ১৯২৯ সালের জানুয়ারিতে কাজী নজরুল সীতাকুন্ডে বেড়াতে আসেন। দলবল নিয়ে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে উঠেন, ঝর্ণায় গা ভেজান। ঝর্ণার পাশে বসে পোজ দিয়ে ছবিও তুলেন। ট্রেন থেকে নেমে সীতাকুন্ড রেলস্টেশনের পুব দিকের চন্দ্রনাথ রেঞ্জের দিকে তাকিয়ে মুখে মুখে গেয়ে উঠেছিলেন তাঁর সেই বিখ্যাত গান, "আকাশে হেলান দিয়ে, পাহাড় ঘুমায় ঐ!" মজার ব্যাপার হচ্ছে এত বড় বিদ্রোহী কবি ছিলেন জোকের ভয়ে কাতর। শেষে ফেরার পথে এমন অবস্থা হয় যে তাঁকে কয়েকজন ভ্রমণসঙ্গী মিলে কাঁধে চড়িয়ে পাহাড় থেকে নামাতে হয়।

চন্দ্রনাথ ভ্রমণ শেষে কবি সাম্পানে চড়ে সন্দ্বীপ বেড়াতে যান (এই বিষয়ে বিস্তারিত আগে ব্লগে লিখেছি। আগ্রহীরা দেখে নিতে পারেন)।  "খেলিছে জলদেবী, সুনীল সাগর জলে। তরঙ্গ লহর তোলে, লীলায়িত কুন্তলে।" অথবা "দূর দ্বীপবাসিনী, দারুচিনির দেশের তুমি বিদেশিনীগো, সুমন্দভাষিণী।" টাইপ মাষ্টারপিস গুলো তখনই লেখা!

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী, পতেঙ্গা, কাট্টলী, হাটহাজারীসহ বহু জায়গায় বেড়ান নজরুল। থাকতেন তামাকুমন্ডিলেনস্থ বন্ধুর বাসায়। সিন্ধু হিন্দোল রচনার শুরু পতেঙ্গা সৈকতে।

৮৮ বছর আগে সীতাকুন্ডের পাহাড়ে গায়ে আলখেল্লা জড়ানো নজরুলের বেশভূষা ও ব্যাকগ্রাউন্ডের ঝর্ণাটি খেয়াল করুন। দেখুন নজরুল যে পাথরটিতে বসে আছে সেটি। লক্ষ্য করতে ভুলবেন না আশেপাশের প্রকৃতি, পাথরে জন্মানো উদ্ভিদরাজি। স্থানটি কি কেউ শনাক্ত করতে পারছেন?

মনটা ভরে গেলো! সীতাকুন্ড ফরেভার! নজরুল ফরেভার!

No comments:

Post a Comment