আসামের নীলাচল পাহাড়ের চূড়ায় হাজার বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা চিররহস্যময় কামাখ্যা দেবীর মন্দির। রাজ্যের আদি নাম কামরুপ তাই কামরুপ কামাখ্যা নামেই এটি বেশি পরিচিত। মূলত কালো জাদু চর্চাকারী তান্ত্রিক সাধকগণ এখানে অবস্থিত কামাখ্যা মন্দিরকে কেন্দ্র করে তাদের সাধনা করতো কারণ এখানে আছে দশমহাবিদ্যা অর্থাৎ ভুবনেশ্বরী, বগলামুখী, ছিন্নমস্তা, ত্রিপুরাসুন্দরী, তারা, কালী, ভৈরবী, ধূমাবতী, মাতঙ্গী ও কমলার মন্দির। তাছাড়া সুদর্শনচক্রে ছিন্ন সতীদেবীর যোনীও এখানে(যা মূলত একটি হট স্প্রিং ও আয়রন বেশি থাকায় পানি লাল যা দেবীর ঋতুস্রাব বলে প্রচারিত) উপরে উল্লেখিত সকলেই নারী ও তন্ত্র মন্ত্র সাধনায় তাদের কৃপা বিশেষ প্রয়োজনীয়। তাছাড়া আদিকাল থেকেই ভারতবর্ষে মিথ ছিলো একবার কামাখ্যায় পৌঁছুতে পারলে চিরকাল এখানকার দেবদাসীদের ভোগের উপকরণ হয়ে জীবন পার করা যাবে। তাই সেযুগে ঘর পালানো যুবকদের কাঙখিত গন্তব্য ছিলো কামরুপ কামাখ্যা মন্দির। তাছাড়া ব্রহ্মপুত্রের বন্ধনে যেহেতু বাংলা আর কামরুপ বাঁধা তাই ইচ্ছা থাকলে কামাখ্যা পৌঁছুনো একদম অসম্ভবও ছিলোবা। ঘরছাড়া যুবকেরা সেখান গিয়ে এসব না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেও শিখে আসতো নানা বুজরুকি আর একারণেই একটা সময় সমাজে কামরুপ কামাখ্যা ফেরতদের বিশেষ সমীহ মিশ্রিত কদর ছিলো।
গোহাটি স্টেশন থেকে পায়ে হেটে নদীর পাড়ে গেলাম৷ সেখান থেকে একটা অটো নিয়ে সোজা চলে গেলাম নীলাচল পাহাড়। কয়েক প্যাচ ঘুরে রাস্তা উঠলো পাহাড়ের চূড়োতে৷ এককালে যখন রাস্তা ছিলোনা এই পথই নিশ্চয় অনেক দূর্গম ছিলো৷ যেমনটা আগে বলেছিলাম মূল মন্দিরের আশে পাশে অনেক তন্ত্রমন্ত্র সাধনের দেবীদের মন্দির। সবগুলোতে ঢুকার সময় ও সুযোগ ছিলোনা৷ আমি কামাখ্যাদেবী ও ছিন্নমস্তার ভূগর্ভস্ত গুহাসম অন্ধকার কক্ষে নেমেছিলাম সিড়ি ভেঙ্গে। ছিন্নমস্তার মন্দিরে আমি ছাড়া সে সময় আর কেউ ছিলোনা তাই বেশ গা ছমছম করছিলো। (ছিন্নমস্তা দেবীকে নিয়ে বছরদুয়েক আগে লিখেছিলাম। লিংক কমেন্টে।)
পুরো মন্দির কম্পাউন্ডজুড়ে অসংখ্য কবুতর, পাঠা ও কুকুর। কিছু পাঠা সাইজে আমার সমান হবে প্রায়। মনুষ্যজাতির মধ্যে আধুনিক তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে জটাধারী সাধু সবাই উপস্থিত। টাকা পয়সা না দেওয়াতে এক জটাধারী সাধু সাকিন জেনে শেষতক "বাঙাল হ্যায় কাঙাল" বলে অভিশাপ দিলেন 😁। খারাপ বলেননি সাধু, ঘরের কাছে কামাখ্যা মন্দির অথচ ভ্রমণে অনিচ্ছুক ঘরকুনো বাঙালির কাছে এটা আজো হয়ে আছে রহস্যময় এক স্থান৷ কাঙ্গালী বাঙালি বলবোনা কারণ স্বভাবে হাড়কেপ্পন হলেও আমি পশ্চিমবঙ্গের দাদাদের ফি বছর নিয়ম করে পরিবারসমেত ভ্রমণ করতে(প্লাস বই কিনতে) দেখি৷ যা তাদের কিপ্টেমির একটা লেজিটিমেসি দেয়! কিন্তু বাংলাদেশীদের বেলায় এখনো কথাটা খুব খাটে! ভ্রমণ না করলে যত পয়সা হোক জাতি হিসেবে মানসিকভাবে কাঙালই যে থেকে যাবো শেষতক!
গোহাটি স্টেশন থেকে পায়ে হেটে নদীর পাড়ে গেলাম৷ সেখান থেকে একটা অটো নিয়ে সোজা চলে গেলাম নীলাচল পাহাড়। কয়েক প্যাচ ঘুরে রাস্তা উঠলো পাহাড়ের চূড়োতে৷ এককালে যখন রাস্তা ছিলোনা এই পথই নিশ্চয় অনেক দূর্গম ছিলো৷ যেমনটা আগে বলেছিলাম মূল মন্দিরের আশে পাশে অনেক তন্ত্রমন্ত্র সাধনের দেবীদের মন্দির। সবগুলোতে ঢুকার সময় ও সুযোগ ছিলোনা৷ আমি কামাখ্যাদেবী ও ছিন্নমস্তার ভূগর্ভস্ত গুহাসম অন্ধকার কক্ষে নেমেছিলাম সিড়ি ভেঙ্গে। ছিন্নমস্তার মন্দিরে আমি ছাড়া সে সময় আর কেউ ছিলোনা তাই বেশ গা ছমছম করছিলো। (ছিন্নমস্তা দেবীকে নিয়ে বছরদুয়েক আগে লিখেছিলাম। লিংক কমেন্টে।)
পুরো মন্দির কম্পাউন্ডজুড়ে অসংখ্য কবুতর, পাঠা ও কুকুর। কিছু পাঠা সাইজে আমার সমান হবে প্রায়। মনুষ্যজাতির মধ্যে আধুনিক তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে জটাধারী সাধু সবাই উপস্থিত। টাকা পয়সা না দেওয়াতে এক জটাধারী সাধু সাকিন জেনে শেষতক "বাঙাল হ্যায় কাঙাল" বলে অভিশাপ দিলেন 😁। খারাপ বলেননি সাধু, ঘরের কাছে কামাখ্যা মন্দির অথচ ভ্রমণে অনিচ্ছুক ঘরকুনো বাঙালির কাছে এটা আজো হয়ে আছে রহস্যময় এক স্থান৷ কাঙ্গালী বাঙালি বলবোনা কারণ স্বভাবে হাড়কেপ্পন হলেও আমি পশ্চিমবঙ্গের দাদাদের ফি বছর নিয়ম করে পরিবারসমেত ভ্রমণ করতে(প্লাস বই কিনতে) দেখি৷ যা তাদের কিপ্টেমির একটা লেজিটিমেসি দেয়! কিন্তু বাংলাদেশীদের বেলায় এখনো কথাটা খুব খাটে! ভ্রমণ না করলে যত পয়সা হোক জাতি হিসেবে মানসিকভাবে কাঙালই যে থেকে যাবো শেষতক!
No comments:
Post a Comment