21 Jun 2020

আইয়ুব বাচ্চুর কষ্টের প্রকৃত উৎস কি ছিলো?

বাচ্চু ভাইয়ের মাতৃপ্রেমের কথা সর্বজনবিদিত। তিনি সবসময় সবখানে তাঁর আইয়ুব বাচ্চু হয়ে উঠার পেছনে মায়ের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করতেন। কিন্তু বাচ্চু ভাইয়ের স্ট্রাগলের পেছনের পুরো গল্পটা জানেন খুব কম মানুষই৷ ক্লাস সেভেনে থাকতে বাচ্চু ভাইকে প্রথম গিটার কিনে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা। তার কিছুদিন পর বাচ্চু ভাইয়ের বাবা মায়ের সেপারেশন হয়ে গেলে বাচ্চু ভাইসহ তারা তিন ভাই মায়ের সাথে নানাবাড়িতে এসে উঠেন। সেখানেই বাচ্চু ভাইয়ের বেড়ে উঠা। বাচ্চু ভাইয়ের বাবা আরেক পক্ষের পরিবার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন বলে বাচ্চু ভাইদের খোঁজখবর রাখতেন না। সে সময় স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের নানারকম স্ট্রাগলের ভেতর দিয়ে যেতে হতো। পড়াশোনার চাইতে সেলসম্যান হিসেবে বেশি সময় দিতে হতো মামাবাড়ির পারিবারিক ব্যবসা রেয়াজুদ্দিন বাজারের তামাকুন্ডি লেনস্থ জুতার দোকানে। এর ভেতরেই সময় বের করে নিজের প্যাশন গিটারের পিছনে লেগে থেকে মায়ের বড় ছেলে রবিনের আইয়ুব বাচ্চু হয়ে উঠা। আইয়ুব বাচ্চুর প্রায় সব গানই কষ্টকে উপজীব্য করে। এই কষ্টের উৎস সবাই যেমনটা ধরে নেয় নারীঘটিত তেমনটি বোধহয় ছিলো না। বাচ্চু ভাই নিজের পছন্দেই বরিশালের মেয়ে বিয়ে করেন যা সে সময় প্রতিষ্ঠিত না হওয়া একটা চট্টগ্রামের ছেলের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিংই বলা যায়। সুতরাং নারীঘটিত কষ্ট নিয়ে পড়ে থাকার সময় তাঁর ছিলোনা।

২০০০ সালের দিকে 'প্রেম তুমি কি' এলবামে বাচ্চু ভাই তাঁর বাবাকে নিয়ে একটা গান করেন। অন্য সব গানের মত সেটি বাবার মহিমা বা প্রশস্তিসূচক গান ছিলোনা বরং এই গানে বাচ্চু ভাই বাবার প্রতি জমে থাকা তাঁর সকল অব্যক্ত কষ্ট আর ক্ষোভ ঢেলে দিয়েছেন। গানের লিরিকটা দেখলে বুঝবেন। (লিংক ও লিরিক কমেন্টে সংযুক্ত) বাচ্চু ভাই তারপরও ব্যক্তিজীবনে বাবার খোঁজখবর রেখেছেন। নিজের আপন তিন ভাইয়ের মত সৎ বোনদের প্রতিও দায়িত্ব পালন করেছেন। বাবা গুরুতর অসুস্থ্য হলে ঢাকায় নিয়ে দীর্ঘদিন নিজের কাছে রেখে চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু যখন প্রয়োজন ছিলো তখন বাবাকে কাছে না পাবার কষ্ট মনের মধ্যে পুষে রেখেছেন আমৃত্যু। অপ্রকাশিত কষ্টই নাকি সকল মহৎ সৃষ্টির অনুপ্রেরণা। কোন গোপন কষ্ট, না পাবার বেদনা মানুষকে ক্রিয়েটিভিটি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়৷ বাচ্চু ভাইয়ের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে কি? বাবার স্নেহবঞ্চিত হওয়াজনিত দুঃখবোধই কি ছিলো আইয়ুব বাচ্চুর সকল কষ্টভরা সৃষ্টির অনুপ্রেরণা?

Link:

https://youtu.be/rW-aeDoO5BY

No comments:

Post a Comment