একজন 'পাগলা রাজা'র কীর্তি
নাটোর দিঘাপতিয়ার জমিদার বাবু শরৎ কুমার রায় এর মদ বা বাইজি নাচানোর নেশা ছিলোনা। দেড়শো বছর আগের অনগ্রসর অসচেতন টালটামাল সময়েও এই লোক খুঁজে বেড়াতেন হারানো দিনের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। কোন মজা পুকুরে বা দূরের জমিদারীতে কোন নিদর্শনের সন্ধান মিললেই ভদ্রলোক হাতি সমেত ছুটে যেতেন তা উদ্ধারে। আড়ালে-আবডালে লোকে বলতো পাগলা রাজা। তাতে থোড়াই কেয়ার করতেন শরৎবাবু। তিনি বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি প্রতিষ্ঠা করে তার মাধ্যমে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে মহাস্থানগড় ও পাহাড়পুরে অনুসন্ধান চালান। একপর্যায়ে তাঁরই দান করা জায়গায় ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের প্রথম জাদুঘর 'বরেন্দ্র জাদুঘর'। দেশের সবচে সমৃদ্ধ জাদুঘরের স্বপ্নদ্রষ্টা শরৎ কুমার রায় সম্পর্কে জন্ম মৃত্যুর সাল ছাড়া তেমন ডিটেইলস কোন তথ্য কোথাও নেই। জানা যায় ভদ্রলোক ছিলেন সুলেখক, শিক্ষানুরাগী, কৃষকবান্ধব ও অসাম্প্রদায়িক। তাঁর বেশিরভাগ কর্মচারীই ছিলেন মুসলিম। কৃষকদের স্বার্থেই তিনিই রাজশাহী অঞ্চলে প্রথম কৃষি কলেজ ও চিনিকল প্রতিষ্ঠা করেন। শরৎ বাবুর রবীন্দ্রনাথের সাথে ভালো যোগাযোগ ছিলো কিন্তু তাঁর লেখা বইগুলো হারিয়ে গেছে। লোকে যতোই পাগলা রাজা বলুক ভদ্রলোক নি:সন্দেহে তাঁর যুগের চেয়ে অগ্রসর ছিলেন। নয়তো দেশের সবচে সমৃদ্ধ জাদুঘরখানা আমরা পেতাম না। আমার যদি ক্ষমতা থাকতো তবে রাজশাহী বরেন্দ্র যাদুঘরের সামনে শরৎবাবুর একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করতাম।
গত তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ফ্রান্সে প্রদর্শনীর নাম করে এর নিদর্শন সমূহ ফ্রান্সে পাঠানোর মাঝপথে সচেতন নাগরিকদের প্রতিবাদে তা বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ আছে ফ্রান্সে পাঠানো সব নিদর্শন আর ফেরত আসেনি। ৬৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরের দায়িত্বে থাকলেও মনে হয়না তাদের এ ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিকতা আছে। সেকারণেই বরেন্দ্র যাদুঘরের উচ্চমানের সংগ্রহ দেখে মন ভরে গেলেও এর কিছু নিদর্শন খোলা লনে যেখানে সেখানে ইতস্তত ছড়িয়ে রাখা দেখে অবাক হলাম। দায়িত্বশীল ব্যক্তি বললেন এর কারণ স্থানাভাব কিন্তু আমি দেখলাম মুসলিম ঐতিহ্য নামের একটি পুরো গ্যালারী বুলশিট সব জিনিসপত্র দিয়ে ঠেসে জায়গা নষ্ট করা হচ্ছে! অথচ অমূল্য নিদর্শনগুলো রোদে পুড়ছে, বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে।
দুই-আড়াই হাজার বছরের আদি নিদর্শনে সমৃদ্ধ বরেন্দ্র জাদুঘরকে রক্ষা করবে কে?
নাটোর দিঘাপতিয়ার জমিদার বাবু শরৎ কুমার রায় এর মদ বা বাইজি নাচানোর নেশা ছিলোনা। দেড়শো বছর আগের অনগ্রসর অসচেতন টালটামাল সময়েও এই লোক খুঁজে বেড়াতেন হারানো দিনের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। কোন মজা পুকুরে বা দূরের জমিদারীতে কোন নিদর্শনের সন্ধান মিললেই ভদ্রলোক হাতি সমেত ছুটে যেতেন তা উদ্ধারে। আড়ালে-আবডালে লোকে বলতো পাগলা রাজা। তাতে থোড়াই কেয়ার করতেন শরৎবাবু। তিনি বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি প্রতিষ্ঠা করে তার মাধ্যমে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে মহাস্থানগড় ও পাহাড়পুরে অনুসন্ধান চালান। একপর্যায়ে তাঁরই দান করা জায়গায় ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের প্রথম জাদুঘর 'বরেন্দ্র জাদুঘর'। দেশের সবচে সমৃদ্ধ জাদুঘরের স্বপ্নদ্রষ্টা শরৎ কুমার রায় সম্পর্কে জন্ম মৃত্যুর সাল ছাড়া তেমন ডিটেইলস কোন তথ্য কোথাও নেই। জানা যায় ভদ্রলোক ছিলেন সুলেখক, শিক্ষানুরাগী, কৃষকবান্ধব ও অসাম্প্রদায়িক। তাঁর বেশিরভাগ কর্মচারীই ছিলেন মুসলিম। কৃষকদের স্বার্থেই তিনিই রাজশাহী অঞ্চলে প্রথম কৃষি কলেজ ও চিনিকল প্রতিষ্ঠা করেন। শরৎ বাবুর রবীন্দ্রনাথের সাথে ভালো যোগাযোগ ছিলো কিন্তু তাঁর লেখা বইগুলো হারিয়ে গেছে। লোকে যতোই পাগলা রাজা বলুক ভদ্রলোক নি:সন্দেহে তাঁর যুগের চেয়ে অগ্রসর ছিলেন। নয়তো দেশের সবচে সমৃদ্ধ জাদুঘরখানা আমরা পেতাম না। আমার যদি ক্ষমতা থাকতো তবে রাজশাহী বরেন্দ্র যাদুঘরের সামনে শরৎবাবুর একটি আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করতাম।
গত তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ফ্রান্সে প্রদর্শনীর নাম করে এর নিদর্শন সমূহ ফ্রান্সে পাঠানোর মাঝপথে সচেতন নাগরিকদের প্রতিবাদে তা বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ আছে ফ্রান্সে পাঠানো সব নিদর্শন আর ফেরত আসেনি। ৬৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জাদুঘরের দায়িত্বে থাকলেও মনে হয়না তাদের এ ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিকতা আছে। সেকারণেই বরেন্দ্র যাদুঘরের উচ্চমানের সংগ্রহ দেখে মন ভরে গেলেও এর কিছু নিদর্শন খোলা লনে যেখানে সেখানে ইতস্তত ছড়িয়ে রাখা দেখে অবাক হলাম। দায়িত্বশীল ব্যক্তি বললেন এর কারণ স্থানাভাব কিন্তু আমি দেখলাম মুসলিম ঐতিহ্য নামের একটি পুরো গ্যালারী বুলশিট সব জিনিসপত্র দিয়ে ঠেসে জায়গা নষ্ট করা হচ্ছে! অথচ অমূল্য নিদর্শনগুলো রোদে পুড়ছে, বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হচ্ছে।
দুই-আড়াই হাজার বছরের আদি নিদর্শনে সমৃদ্ধ বরেন্দ্র জাদুঘরকে রক্ষা করবে কে?
No comments:
Post a Comment