আজ ছিলো এভারেষ্ট দিবস। নিউজিল্যান্ডের নাগরিক এডমুন্ড হিলারী (পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশে নিউজিল্যান্ডের হাইকমিশনারও ছিলেন) আর শেরপা তেনজিন নোরগের ১৯৫৩ সালে এভারেষ্ট চূড়া আরোহণের ৬৭তম বার্ষিকী। তবে ভাগ্য সহায় হলে আরো অনেক আগেই এভারেষ্ট আরোহন করে ইতিহাসের খাতায় নাম লেখাতে পারতেন জর্জ ম্যালোরি। ভাগ্য বিড়ম্বিত এই পথিকৃত পর্বতারোহী ১৯২৪ সালে তাঁর তৃতীয় এভারেষ্ট অভিযানে সঙ্গী আরভিনসহ নিখোজ হয়েছিলেন। যোগাযোগহীনতার সে যুগে নিশ্চিত হওয়া যায়নি নিখোঁজ হবার সময় তিনি চূড়ায় উঠছিলেন নাকি সামিট শেষে ফিরে আসছিলেন। তারপর কত নদী সরোবর হিমালয়ের বরফ গলা জলে সিক্ত হলো, কত ঝড়-ঝঞ্ঝা ছুঁয়ে গেলো হিমালয়ের হিমশীতল কোল, কেটে গেলো অনেক অনেক বছর। শুভ্র হিমবাহের ধবল দীপ্তিমাখা হিম বহুবছর আগলে রাখলো ম্যালোরীর মৃতদেহ। অবশেষে ১৯৯৯ সালে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কাছে হার মেনে বরফ গলে ম্যালোরির মৃতদেহ দৃশ্যমান হলো। ১৮৮৬ তে জন্ম নেয়া ম্যালোরির বয়স ১৯২৪ সালে ছিলো ৩৮। নিহত হবার আরো ৭৫ বছর পর ১৯৯৯ সালে ম্যালোরির ১১৩ বছরের পুরোনো দেহখানা যখন আবিস্কৃত হলো হিমাঙ্কের নিচের ফ্রিজিং টেম্পারেচারে তখনো প্রকৃতি মাতা তুষারের চাদর বিছিয়ে রেখে তাঁকে সংরক্ষণ করে রেখেছে একদম অবিকৃতভাবে। অথচ ইতিমধ্যে তারই পরবর্তী দু'প্রজন্ম স্বাভাবিক পৃথিবীর আলো-হাওয়ায় জীবন ধারণ শেষে জরাক্রান্ত হয়ে/অপঘাতে পরমায়ু ফুরিয়ে ঠাই নিয়েছে কবরে। নিজস্ব নিয়মেই তাদের দেহবশেষও গ্রাস করে নিয়েছে প্রকৃতি। মাটির পৃথিবীতে মাটি হয়ে হারিয়ে গেছে তারা!
আচ্ছা আরেকটু বুঝিয়ে বলি; ধরে নিলাম ২৫ বছর বয়সী এক পর্বতারোহী হারিয়ে গেলেন পর্বতগাত্রে তার ১ বছরের পিতার স্মৃতিহীন সন্তানকে রেখে, হয়তো ৭৫ বছর পর কোন উদ্ধারকারী দল সেই পিতার তুষারের হিমঘরে অবিকৃত হয়ে থাকা লাশকে উদ্ধার করলো। ৭৫ বছর বয়সী সন্তান যখন পিতার লাশের মুখোমুখি হবে কি অদ্ভুত অনুভূতিটাই না তার হবে! তার সামনে যে পিতার লাশ মহাকালের সাপেক্ষে তার বয়স ১০০ কিন্তু তার চেহারা বলছে সেটি আটকে গেছে পঁচিশে! এ যেন পরাবাস্তবতার মুখোমুখি দাড়ানো, মুখে বলিরেখার ত্রিকোণমিতি আঁকা ৭৫ বছরের বৃদ্ধ পুত্রের সামনে এ যেন ২৫ বছরের সতেজ তরুণ পিতা! প্রকৃতির কোন নিয়ম নেই, প্রকৃতি চলে তার আপন খেয়ালেঃ হিমালয়ের হিম আলয়ে মৃত্যুর আনাগোনা থাকলেও বার্ধক্যের জরা ছুতে পারেনা কাউকে। দেবাত্মা হিমালয়ে তাই আজো অমরত্বের হাতছানি, তাই হয়তো ছুটে যেতে হয় বারে বারে।
(৭৫ বছর পর ম্যালোরীকে উদ্ধারের ভিডিওটাও দিলাম, এটা না দেখলে ফিল পাবেন না। ম্যালোরী আর তার কন্যার একটা ছবিও দিলাম। ম্যালোরীর মৃতদেহ যখন ৭৫ বছর পর হিমালয়ের হিমঘর থেকে অবিকৃত উদ্ধার হলো তারও অনেক আগেই সেই শিশু বৃদ্ধা হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন অন্য পৃথিবীতে৷ একারণেই হয়তো লোককথায়, ধর্মে, মিথে বলে হিমালয় দিতে পারে চিরতারুণ্য। আসলেই পারে, তবে মৃত্যুই হলো সেই চিরতারুণ্যের দুয়ার!)
আচ্ছা আরেকটু বুঝিয়ে বলি; ধরে নিলাম ২৫ বছর বয়সী এক পর্বতারোহী হারিয়ে গেলেন পর্বতগাত্রে তার ১ বছরের পিতার স্মৃতিহীন সন্তানকে রেখে, হয়তো ৭৫ বছর পর কোন উদ্ধারকারী দল সেই পিতার তুষারের হিমঘরে অবিকৃত হয়ে থাকা লাশকে উদ্ধার করলো। ৭৫ বছর বয়সী সন্তান যখন পিতার লাশের মুখোমুখি হবে কি অদ্ভুত অনুভূতিটাই না তার হবে! তার সামনে যে পিতার লাশ মহাকালের সাপেক্ষে তার বয়স ১০০ কিন্তু তার চেহারা বলছে সেটি আটকে গেছে পঁচিশে! এ যেন পরাবাস্তবতার মুখোমুখি দাড়ানো, মুখে বলিরেখার ত্রিকোণমিতি আঁকা ৭৫ বছরের বৃদ্ধ পুত্রের সামনে এ যেন ২৫ বছরের সতেজ তরুণ পিতা! প্রকৃতির কোন নিয়ম নেই, প্রকৃতি চলে তার আপন খেয়ালেঃ হিমালয়ের হিম আলয়ে মৃত্যুর আনাগোনা থাকলেও বার্ধক্যের জরা ছুতে পারেনা কাউকে। দেবাত্মা হিমালয়ে তাই আজো অমরত্বের হাতছানি, তাই হয়তো ছুটে যেতে হয় বারে বারে।
(৭৫ বছর পর ম্যালোরীকে উদ্ধারের ভিডিওটাও দিলাম, এটা না দেখলে ফিল পাবেন না। ম্যালোরী আর তার কন্যার একটা ছবিও দিলাম। ম্যালোরীর মৃতদেহ যখন ৭৫ বছর পর হিমালয়ের হিমঘর থেকে অবিকৃত উদ্ধার হলো তারও অনেক আগেই সেই শিশু বৃদ্ধা হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন অন্য পৃথিবীতে৷ একারণেই হয়তো লোককথায়, ধর্মে, মিথে বলে হিমালয় দিতে পারে চিরতারুণ্য। আসলেই পারে, তবে মৃত্যুই হলো সেই চিরতারুণ্যের দুয়ার!)
No comments:
Post a Comment